খুলনার দৌলতপুরে যুবদল নেতা জসিমের দৌরাত্ম্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকান পাট ও ঘাট দখলের অভিযোগ
মল্লিক জামাল দৌলতপুর প্রতিনিধি:
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে খুলনা আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতাকর্মী আত্মগোপনে রয়েছেন।এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন তাদের দখলে থাকা বিভিন্ন মাছের ঘের ব্যবসা-বাণিজ্য দোকান পাট এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন নানা সম্পদ দখল হয়ে গেছে।বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একে একে এসব সম্পদ দখল করার অভিযোগ উঠেছে। নৈরাজ্য থেকে বিরত থাকতে দলটির পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হলেও তা অনেকেই মানছেনা।এমনই এক অভিযোগ এসেছে খুলনা মহানগরী যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক দৌলতপুর থানা যুবদল, এম এম জসিম এর নামে। লিখিত অভিযোগে জানা যায় নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া জসিমের নাম গন্ধ শোনা যায়নি ক দিন আগেও, সেই জসিম এখন ৪ মাসের ব্যবধানে নব্য কোটিপতি।দৌলতপুর এলাকায় রয়েছে তার ব্যাপক প্রভাব।আর এ সবই করেছেন তিনি ৫ আগষ্টের পর চাঁদাবাজী ও হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে।অভিযোগ রয়েছে দৌলতপুরে চিহ্নিত মাদক কারবারীদেরকে নিয়ে গত ৫ আগস্ট এর পর জসিম ও তার ভাই অসিম এলাকায় একটি বাহিনী গঠন করে।সেই বাহিনী প্রথমেই দখল করে দৌলতপুর বিনাপানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থাকা দুটি দোকান ঘর ও একটি ক্লাব।পরে দোকান দুটি ভাড়া দিয়ে ক্লাব ঘরে বসানো হয় কেরাম বোর্ড, সেখানে চলে জুয়ার আসর।পাশাপাশি এলাকায় যাতায়াত কারী বালুর ট্রাক থেকে নেওয়া হয় টোকেন মানি। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, ৫ই আগস্ট এর পর বিএনপি’র নেতাকর্মীরা শহরের একাধিক প্রতিষ্ঠান দখল করেছে। একই সাথে দৌলতপুরে বিনাপানি স্কুলের সামনে থাকা আমার চেম্বারটিও দখল করেছে।আমার অপরাধ আমি ফ্যাসিষ্টদের সাথে সঙ্গ দেই। এদিকে দৌলতপুর বাজার বনিক সমিতির ত্রিবার্ষিক নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করতে যাচ্ছে জসিম।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দৌলতপুর বাজার ব্যবসায়ী রহমান (ছদ্মনাম) জানান জসিম বাজার বনিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক। স্বৈরাচার সরকার বিদায়ের পর কমিটি বিলুপ্ত হলে বর্তমানে পুরো সমিতির একক নিয়ন্ত্রক তিনি।দৌলতপুর বাজারে কয়েকটি দোকান ঘর দখল সহ কেনা বেচায় রয়েছে তার আধিপত্য।অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর নিকট থেকে নানা অজুহাতে মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে জসিম বাহিনী টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।তিনি বলেন আমাকে ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোশর আক্ষা দিয়ে সময়ে অসময়ে টাকা চায়।চাহিদা মাফিক টাকা না দিলে মিথ্যা মামলার ভয় দেখায়।জসিম ও তার ভাই অসিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকাকালে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে তার ছিলো দারুন সক্ষতা।শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের ভাগিনা সদ্য গণপিটুনিতে নিহত মাদক কারবারী রুপমের সহযোগী ছিলো জসিম ও তার ভাই অসিম।অভিযোগ আছে দৌলতপুরে পরিত্যাক্ত লঞ্চঘাটটি নিয়ন্ত্রণে ছিলো সেলিম নামে এক ব্যাক্তির।৫ আগস্ট এর পর সেই ঘাট দখল করে জসিম ও তার বাহিনী।পরবর্তীতে তাদের উভয়ের মধ্যে একটা সমঝোতা হয় বলে জানাগেছে।অভিযোগ রয়েছে দৌলতপুর নিশাত কমপ্লেক্সের একজন স্বর্ন ব্যবসায়ীর দোকানে তালা লাগিয়ে দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে পরবর্তীতে তালা খুলে দেয় জসিম।এ জাতীয় কিছু ভিডিও ফুটেজ এবং স্টিল ছবি এসেছে আমাদের কাছে।এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খান রবিউল ইসলাম রবি বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনা থাকা সত্বেও যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের ন্যায় দখল দারিত্বের মত অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবেন, মাদকের সঙ্গে যুক্ত হবেন তাকে দল ছেড়ে বিদায় নিতে হবে।জসিমের বিরুদ্ধে অভিযোগের সততা পেলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিব।অভিযোগের বিষয়ে জসিমের নিকট জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন।তিনি বলেন যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে সে কোন দোকান ঘর দখল করেছেন তাহলে তিনি দল থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন।একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে তিনি দাবি করেন।
Leave a Reply