শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় অবহেলা: ৪ মাসেও স্মার্ট কার্ড পায়নি ১০৫০ টিসিবি পরিবার,পণ্য ক্রয় অনিশ্চিত
আখলাক উদ্দিন মনসুর শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলার কারণে প্রায় চার মাস ধরে ১ হাজার ৫০ জন টিসিবি ফ্যামেলী নতুন স্মার্ট কার্ড পাননি। ফলে এসব সুবিধাভোগী ন্যায্য মূল্যে পণ্য ক্রয় করতে পারছেন না।জানা যায়, উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতে টিসিবি ফ্যামেলী স্মার্ট কার্ড বিতরণ সম্পন্ন হলেও শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১ হাজার ৫০ জন পরিবার এখনো নতুন স্মার্ট কার্ডের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। টিসিবি নতুন স্মার্ট কার্ড না পাওয়ায় এসব পরিবার ডিলারদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে পণ্য কিনতে পারছেন না। পৌর কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে কোনো কার্যকর নজরদারি নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে। সূত্র জানায়, শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে টিসিবি ফ্যামেলীর পুরাতন কার্ডধারী ছিলেন ২ হাজার ১৫৭ জন। এর মধ্যে নতুন স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র ১ হাজার ১০৭ জনকে। বাকি ১ হাজার ৫০ জন সুবিধাভোগী এখনো স্মার্ট কার্ড হাতে পাননি। এদের মধ্যে ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের কোনো পরিবারই নতুন স্মার্ট কার্ড পায়নি। অন্যান্য ওয়ার্ডেও প্রায় অর্ধেক সুবিধাভোগী গত চার মাস ধরে এই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। প্রতিদিন টিসিবি নতুন স্মার্ট কার্ডের জন্য পৌরসভায় যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন এবং বলছেন স্মার্ট কার্ড আসতে সময় লাগবে, এলে ফোন করে জানানো হবে। পৌরসভার সহকারী ও ৪ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত মোঃ আতাউর রহমান জানান, টিসিবি ফ্যামেলীর পুরাতন কার্ড যাচাই-বাছাই করে পাঠানো হয়েছে। পুরাতন কার্ডধারীরা তাদের কার্ড, এনআইডি ফটোকপি ও মোবাইল নম্বর জমা দিয়েছেন। যাদের নতুন স্মার্ট কার্ড এসেছে, তারা পণ্য কিনছেন। তিনি আরও বলেন, তার ৪ নং ওয়ার্ডসহ অন্যান্য ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নতুন স্মার্ট কার্ড পাওয়ার জন্য তিনি চেষ্টা চালাচ্ছেন। সারাদেশে টিসিবি নতুন স্মার্ট কার্ডের প্রসেসিং কাজ চলমান এবং তা ধাপে ধাপে আসবে। এ বিষয়ে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ সোহেল রানা জানান, যতগুলো নতুন স্মার্ট কার্ড তৈরি হয়েছে, ততগুলোই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে অনেক সময় পৌরসভা বা ইউনিয়নের দেওয়া টিসিবি ফ্যামেলী কার্ডের তথ্যে ভুল থাকায় সমস্যা হয়েছে। সেগুলো সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলোকে বাকিদের তথ্য আপলোড করতে বলা হয়েছিল। সরকারি আইডি-র পরিবর্তে ব্যক্তিগত আইডি থেকে তথ্য আপলোড করার কারণেও কিছু সমস্যা হয়েছে এবং দেরি হচ্ছে বলে তিনি জানান। এদিকে, ১ হাজার ৫০ জন টিসিবি ফ্যামেলী নতুন স্মার্ট কার্ড না পাওয়ায় ডিলারদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে পণ্য কিনতে না পারার বিষয়টি বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টালে বেশ কয়েকবার প্রকাশিত হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষের এই দীর্ঘসূত্রিতা এবং অবহেলা সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে সুবিধাভোগীদের হাতে নতুন স্মার্ট কার্ড পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্থানীয়রা জোর দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply